Antibiotic Disc কি এবং কিভাবে কাজ করে? | Working Principle
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক হলো ছোট, বৃত্তাকার কাগজের ডিস্ক, যা নির্দিষ্ট পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে গর্ভবতী করা হয়। এটি মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে ব্যাকটেরিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ডিস্কগুলো সাধারণত ৬ মিমি ব্যাসের হয় এবং বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক যেমন পেনিসিলিন, অ্যামপিসিলিন, টেট্রাসাইক্লিন ইত্যাদি দিয়ে প্রস্তুত করা হয়। মেডিস্টোর বিডিতে এটি ৩৪০ টাকায় পাওয়া যায়, যা একটি সাশ্রয়ী অফার।
এই ডিস্কগুলোর প্রধান কাজ হলো Kirby-Bauer ডিস্ক ডিফিউশন টেস্টে ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কোন অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর তা নির্ধারণ করা। বাংলাদেশে হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং গবেষণাগারে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই ব্লগে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্কের কার্যপ্রণালী, প্রকার, ব্যবহার এবং বাংলাদেশে এর উপলব্ধতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। ২০২৫ সালের আপডেট অনুযায়ী, আমরা SEO-অপটিমাইজড কীওয়ার্ড যেমন "অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক কী" এবং "ডিস্ক ডিফিউশন টেস্ট বাংলাদেশ" ব্যবহার করে এই তথ্য সহজবোধ্যভাবে উপস্থাপন করব।
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক কীভাবে কাজ করে?
কার্যপ্রণালী (Working Principle)
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্কের কার্যপ্রণালী Kirby-Bauer ডিস্ক ডিফিউশন পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে। এই পদ্ধতিতে অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক একটি পেট্রি ডিশে মিউলার-হিন্টন আগার (Mueller-Hinton Agar) প্লেটে রাখা হয়, যেখানে ব্যাকটেরিয়া কালচার করা হয়েছে। ডিস্ক থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ধীরে ধীরে আগারে ছড়িয়ে পড়ে, যাকে ডিফিউশন বলে। এই প্রক্রিয়ায়:
ডিস্ক প্লেসমেন্ট: ল্যাব টেকনিশিয়ান পেট্রি ডিশে ব্যাকটেরিয়ার একটি পাতলা স্তর (লন কালচার) তৈরি করে এবং তার উপর অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক রাখেন। প্রতিটি ডিস্কে নির্দিষ্ট মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক থাকে (যেমন ১০ মাইক্রোগ্রাম অ্যামপিসিলিন)।
ইনকিউবেশন: পেট্রি ডিশটি ৩৫-৩৭°C তাপমাত্রায় ১৬-২৪ ঘণ্টা ইনকিউবেট করা হয়। এ সময় অ্যান্টিবায়োটিক আগারে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রভাবিত করে।
ইনহিবিশন জোন: যদি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর হয়, তবে ডিস্কের চারপাশে একটি পরিষ্কার অঞ্চল তৈরি হয়, যাকে "জোন অফ ইনহিবিশন" বলা হয়। এই জোনের ব্যাস মিলিমিটারে মাপা হয়।
ফলাফল বিশ্লেষণ: জোনের আকার CLSI (Clinical and Laboratory Standards Institute) গাইডলাইনের সাথে তুলনা করে ব্যাকটেরিয়াটি সংবেদনশীল (Sensitive), মধ্যবর্তী (Intermediate) বা প্রতিরোধী (Resistant) কিনা তা নির্ধারণ করা হয়।
উদাহরণ: যদি অ্যামপিসিলিন ডিস্কের জন্য জোন ১৭ মিমি বা তার বেশি হয়, তবে ব্যাকটেরিয়াটি সংবেদনশীল। ১৩ মিমি বা কম হলে প্রতিরোধী।
কী কী ফ্যাক্টর কার্যকারিতা প্রভাবিত করে?
আগারের গভীরতা: সাধারণত ৪ মিমি, যা অ্যান্টিবায়োটিকের ডিফিউশন নিয়ন্ত্রণ করে।
ইনকিউবেশন তাপমাত্রা: ৩৫-৩৭°C আদর্শ, অন্যথায় ফলাফল অ্যাকুরেট নাও হতে পারে।
ডিস্কের গুণগত মান: অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমাণ এবং স্টোরেজ (২-৮°C) গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যাকটেরিয়ার ঘনত্ব: ০.৫ ম্যাকফারল্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করা হয়।
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্কের প্রকারভেদ
বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ডিস্ক পাওয়া যায়, যেমন Oxoid, HiMedia, এবং Bio-Rad। প্রতিটি ডিস্ক নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক এবং ঘনত্বের জন্য ডিজাইন করা। জনপ্রিয় প্রকার:
সিঙ্গল অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক: একটি ডিস্কে একটি অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন পেনিসিলিন ১০ ইউনিট)।
মাল্টি-ডিস্ক: একটি প্লেটে ৬-৮টি ভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক থাকে, যা একসাথে পরীক্ষার জন্য।
কাস্টমাইজড ডিস্ক: নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া বা গবেষণার জন্য তৈরি।
জনপ্রিয় অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক (বাংলাদেশে):
অ্যামপিসিলিন (১০ মাইক্রোগ্রাম)
টেট্রাসাইক্লিন (৩০ মাইক্রোগ্রাম)
সিপ্রোফ্লক্সাসিন (৫ মাইক্রোগ্রাম)
জেন্টামাইসিন (১০ মাইক্রোগ্রাম)
এরিথ্রোমাইসিন (১৫ মাইক্রোগ্রাম)
বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্কের ব্যবহার
বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক প্রধানত নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়:
হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার: রোগীর সংক্রমণের জন্য উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক নির্ধারণ।
গবেষণাগার: ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতা (Antibiotic Resistance) নিয়ে গবেষণা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ।
ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি: নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা পরীক্ষা।
বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স একটি বড় সমস্যা। WHO-এর ২০২৫ রিপোর্ট অনুযায়ী, ৬০% ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেন কমপক্ষে একটি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি প্রতিরোধী। তাই ডিস্ক ডিফিউশন টেস্ট গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক টেস্টের ধাপ
নমুনা সংগ্রহ: রোগীর থেকে ব্যাকটেরিয়া নমুনা সংগ্রহ (যেমন রক্ত, প্রস্রাব, স্পুটাম)।
কালচার প্রস্তুতি: মিউলার-হিন্টন আগারে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে লন কালচার তৈরি।
ডিস্ক প্লেসমেন্ট: ডিস্কগুলো সমান দূরত্বে (২৪ মিমি) রাখা হয়।
ইনকিউবেশন: ৩৫-৩৭°C তাপমাত্রায় ১৬-২৪ ঘণ্টা রাখা।
জোন পরিমাপ: ক্যালিপার বা রুলার দিয়ে ইনহিবিশন জোন মাপা।
ফলাফল রিপোর্ট: CLSI চার্ট ব্যবহার করে সংবেদনশীলতা নির্ধারণ।
টিপ: সঠিক ফলাফলের জন্য স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকল (CLSI/NCCLS) অনুসরণ করুন।
বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্কের দাম ও উপলব্ধতা
বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক সাধারণত প্যাকেজে বিক্রি হয় (৫০ বা ১০০ ডিস্ক/প্যাক)। দাম নির্ভর করে ব্র্যান্ড এবং অ্যান্টিবায়োটিকের ধরনের উপর।
ব্র্যান্ড | ডিস্কের ধরন | দাম (প্রতি প্যাক) | সাপ্লায়ার |
|---|---|---|---|
Oxoid | অ্যামপিসিলিন (১০ মাইক্রোগ্রাম) | ২,৫০০-৩,৫০০ টাকা | Labtex BD, RTC Dhaka |
HiMedia | সিপ্রোফ্লক্সাসিন (৫ মাইক্রোগ্রাম) | ২,০০০-৩,০০০ টাকা | BMA Bazar, MedicalStore |
Bio-Rad | মাল্টি-ডিস্ক (৬টি অ্যান্টিবায়োটিক) | ৪,০০০-৫,৫০০ টাকা | Lab Asia BD |
কোথায় কিনবেন?
অনলাইন: medistorebd, Labtex BD (labtexbd.com), BMA Bazar (bmabazar.com), Bdstall (bdstall.com)। ফ্রি ডেলিভারি এবং COD পাওয়া যায়।
অফলাইন: ঢাকার মিরপুর, গুলশান বা মোহাম্মদপুরের ল্যাব সাপ্লাই শপ। চট্টগ্রামে Elite Trade BD।
টিপ: স্টোরেজের জন্য ফ্রিজে (২-৮°C) রাখুন এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ চেক করুন।
সুবিধা ও অসুবিধা
সুবিধা
সহজ এবং সাশ্রয়ী: ডিস্ক ডিফিউশন টেস্ট সস্তা এবং সহজে করা যায়।
দ্রুত ফলাফল: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল পাওয়া যায়।
বহুমুখী: বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং অ্যান্টিবায়োটিক পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত।
স্ট্যান্ডার্ডাইজড: CLSI গাইডলাইনের কারণে ফলাফল বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য।
অসুবিধা
সীমাবদ্ধতা: শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়ার জন্য কার্যকর, ভাইরাস বা ফাঙ্গাসের জন্য নয়।
ম্যানুয়াল প্রক্রিয়া: সঠিক প্লেসমেন্ট এবং পরিমাপে দক্ষতা প্রয়োজন।
রেজিস্ট্যান্স ডিটেকশন: কিছু ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতা সঠিকভাবে ধরা নাও পড়তে পারে।
রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবহারের টিপস
স্টোরেজ: ডিস্কগুলো ২-৮°C তাপমাত্রায় ফ্রিজে রাখুন। আর্দ্রতা থেকে দূরে রাখুন।
মেয়াদ: মেয়াদোত্তীর্ণ ডিস্ক ব্যবহার করবেন না, এতে ফলাফল ভুল হতে পারে।
ল্যাব সেটআপ: মিউলার-হিন্টন আগার এবং ০.৫ ম্যাকফারল্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার করুন।
নিরাপত্তা: বায়োসেফটি ক্যাবিনেটে কাজ করুন এবং গ্লাভস ব্যবহার করুন।
উপসংহার
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে একটি অপরিহার্য টুল, যা ব্যাকটেরিয়ার সংবেদনশীলতা পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। Kirby-Bauer পদ্ধতির মাধ্যমে এটি দ্রুত এবং সাশ্রয়ী ফলাফল দেয়, যা বাংলাদেশের হাসপাতাল ও গবেষণাগারে অত্যন্ত জনপ্রিয়। বাংলাদেশে Oxoid এবং HiMedia ব্র্যান্ডের ডিস্ক সহজলভ্য, এবং দাম ২,০০০ থেকে ৫,৫০০ টাকার মধ্যে। সঠিক স্টোরেজ এবং CLSI গাইডলাইন মেনে চললে এটি নির্ভরযোগ্য ফলাফল দেয়। আরও তথ্যের জন্য Labtex BD বা medistorebd এ যোগাযোগ করুন।
FAQs
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক কী?
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক হলো কাগজের তৈরি ছোট ডিস্ক, যা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে গর্ভবতী। এটি ব্যাকটেরিয়ার সংবেদনশীলতা পরীক্ষায় ব্যবহৃত হয়।
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক কীভাবে কাজ করে?
এটি Kirby-Bauer ডিস্ক ডিফিউশন টেস্টে ব্যবহৃত হয়। ডিস্ক থেকে অ্যান্টিবায়োটিক আগারে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করে, যা ইনহিবিশন জোন তৈরি করে।
বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্কের দাম কত?
Oxoid বা HiMedia ব্র্যান্ডের ডিস্কের দাম ২,০০০-৫,৫০০ টাকা/প্যাক (৫০-১০০ ডিস্ক)। Labtex BD বা BMA Bazar-এ পাওয়া যায়।
কোন ব্র্যান্ডের অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক সেরা?
Oxoid এবং HiMedia বাংলাদেশে জনপ্রিয় এবং CLSI স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলে। Bio-Rad মাল্টি-ডিস্কের জন্য ভালো।
ডিস্ক ডিফিউশন টেস্টের ফলাফল কীভাবে পড়ব?
ইনহিবিশন জোনের ব্যাস মিলিমিটারে মাপুন এবং CLSI চার্টের সাথে তুলনা করে সংবেদনশীল, মধ্যবর্তী বা প্রতিরোধী কিনা নির্ধারণ করুন।
অ্যান্টিবায়োটিক ডিস্ক কোথায় কিনব?
medistorebd ,Labtex BD, BMA Bazar, RTC Dhaka বা Bdstall-এ অনলাইন/অফলাইন কিনুন। ঢাকার মিরপুর বা গুলশানের শপে পাওয়া যায়।
আপনি জানেন কি ?
- হাসপাতালের বিছানা কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং কিভাবে সঠিকটি নির্বাচন করবেন
- POCT Analyzer সব রোগের পরীক্ষা করতে পারে কি?

Comments
Post a Comment